চট্টগ্রামে জসিম নামে এক পুলিশ কনস্টেবলের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। তিনি বন্দর থানায় কর্মরত আছেন। শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রামের বেপারীপাড়া আব্দুল্লাহ কনভেনশন সেন্টার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার কনস্টেবল জসিম বলেন, ‘থানা থেকে বাসায় ফেরার পথে বেপারীপাড়া এলাকায় তিন-চারজন গাড়ির সামনে গিয়ে আমাকে বলে, এই দাঁড়ান। আপনি কী পুলিশ? এরপর আমি কিছু বলার আগেই ১০ থেকে ১৫ জন লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।’
তিনি বলেন, ‘মারধরের একপর্যায়ে দুজন আমাকে এসে রক্ষা করে। পরে তারা সেনাবাহিনীকে কল করে। সেনাবাহিনী আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের এক সদস্য বাসায় ফেরার পথে তার উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। রাস্তায় থাকা ১০ থেকে ১৫ জন লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেছে বলে জানতে পেরেছি।’
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের পাটোয়ারী বলেন, এক পুলিশ সদস্যের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক ওসি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকটি থাকা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ অস্ত্র লুট করা হয়েছে, গাড়ি ও থানার বিভিন্ন সরঞ্জাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেককিছু লুট করে নিয়ে গেছে। থানায় শুধু আসবাবপত্রসহ পুড়ে যাওয়া জিনিসের ছাইগুলো আছে। এখনও পথে পুলিশ পেলে ধরে ধরে মারধর করা হচ্ছে৷ আমাদের নিরাপত্তা না দিয়ে সিনিয়রেরা বলছেন, থানায় গিয়ে কাজ করতে। আমরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘হামলার ঘটনাটি সত্য। আমরা বিষয়টি দেখছি। যেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনী ও র্যাব মুভ করছে।’
পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তায় কিছুটা ঘাটতি আছে, সেটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই। আমরা সেটি কাটিয়ে উঠতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আশাকরি সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’
এর আগে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান শেখ হাসিনা। পরে বিকালে নগরী ও জেলার বেশ কয়েকটি থানায়, ফাঁড়ি, ক্যাম্প ও পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ অস্ত্র-গোলাবারুদ লুট হয়। থানায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের পাশাপাশি থানার সামনে রাখা পুলিশের যানবাহনও আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এরমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরের থানাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিএমপির কোতোয়ালী, পতেঙ্গা, ইপিজেড, বন্দর, পাহাড়তলি, আকবরশাহ ও সদরঘাট থানায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। অন্যান্য থানাগুলোতে ভাঙচুর করা হয়।